বিশ্বকাপ ম্যাচ পরিচালনা করা জার্সিটি নিলামে তুলতে চান কাবাডি রেফারী এসএম আব্দুল মান্নান। মারণঘাতি করোনাভাইরাসে পুরো পৃথিবী আজ দিশেহারা। লাখ লাখ মানুষ মরছে। সামনে কি অপেক্ষা করছে কারও পক্ষে বলা কঠিন। এমন মহামারী পরিস্থিতিতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অনেক মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছন অসহায় ক্ষতিগ্রস্থদের দিকে। বাংলাদেশ-সহ বিশ্বের অনেক বিখ্যাত খেলোয়াড় সেইসব মানুষের সাহায্যের জন্য নিলামে তুলেছেন নিজেদের প্রিয় ও স্মরণীয় ব্যাট, বল, জার্সি সহ আরো কত কি।
এবার সেই তালিকায় নাম লেখাতে চান বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডির রেফারী এসএম আব্দুল মান্নান। নিলামে তুলতে চান সবশেষ ২০১৬ সালে ভারতের গুজরাটের আহামেদাবাদে অনুষ্ঠিত ৩য় বিশ্বকাপ কাবাডির ওপেনিং ও স্বাগতিক ভারত বনাম ইরানের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচসহ মোট ৯টি খেলা পরিচালনা করা সেই জার্সিটি।
জার্সি নিলামে তোলা প্রসঙ্গে মান্নান বলেন, করোনাভাইরাসে আমাদের দেশের অসংখ্য গরীব মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্রিকেটারদের ব্যাট ও বল, মোনেম মুন্নার জার্সি ও ফুটবল রেফারী তৈয়ব ভাইয়ের জার্সিও নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। তাই আমিও ভাবলাম আমার জার্সিটি তো বিশ্বকাপের মত বড় আসরের খেলা পরিচালনা করা জার্সি। এটি বাসায় স্বযত্নে রাখা আছে। কিছুদিন পর হয়তো আমি থাকবো না। তখন এই জার্সি থেকে কি লাভ? তাই এমন কঠিন পরিস্থিতিতে যদি জার্সি বিক্রির পুরো অর্থটা অসহায় মানুষের কাজে লাগানো যেত তাহলে খুব ভাল হতো। আশা করি অসহায় মানুষদের সহযোগিতায় নিলামে তোলা আমার এ জার্সিটি কেনার জন্য সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসবেন।
উল্লেখ বিশ্বকাপে কাবাডি আসরে বাংলাদেশের রেফারী মান্নান “রেফারী অব দ্য টুর্নামেন্ট” নির্বাচিত হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেন।
খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি শেষে ১৯৮৬ সালে কাবাডি রেফারী হিসেবে ম্যাচ পরিচালনা করা শুরু হয় মান্নানের। রেফারী মান্নান বিশ্বকাপ কাবাডির মত বড় আসরের ম্যাচ পরিচালনা ছাড়াও ২০০৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে এশিয়ান বীচ গেমসে পুরুষ ও মহিলা দলের ফাইনাল সহ ৮টি খেলা পরিচালনা করেন। ২০০৯ সনে ম্যাকাওয়ে এশিয়ান ইনডোর গেমসে ফাইনাল সহ ৫টি খেলা পরিচালনা করেন। ২০১১ সনে ভিয়েতনামের হ্যানয়ে এশিয়ান ইনডোর গেমসে ফাইনাল সহ ৬টি খেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনে এশিয়ান ইনডোর গেমসে সেমিফাইনাল, ফাইনাল সহ ৯ টি খেলায় রেফারীর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়াতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে মোট ১০টি ম্যাচ রেফারী হিসেবে পরিচালনা করেন। ২০১৭ সালে জনপ্রিয় প্রো-কাবাডি আসরে ৭টি খেলা পরিচালনা করেন এবং সবশেষ ২০১৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সংযু মার্শাল আট চ্যাম্পিয়নশিপে অন্তর্ভুক্ত কাবাডি ডিসিপ্লিনের ছেলে ও মেয়েদের মোট ১১টি খেলা পরিচালনা করেন দেশের এই প্রথিতযশা কাবাডি রেফারী।