কবিরুল ইসলাম, নেপাল থেকে
সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের নারী ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কাকে মাত্র ২ রানে হারিয়ে আগের দিন শিরোপা উল্লাসে মেতেছিল বাংলাদেশ। একদিনের ব্যাবধানে একই ডিসিপ্লিনের পুরুষ ক্রিকেটেও শ্রীলঙ্কাাকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে পরাস্ত করে এ ইভেন্টে নিজেদের শিরোপা অক্ষুন্ন রেখেছে বাংলাদেশ। আজ সোমবার ফাইনালের রঙ্গীন মঞ্চে জুনিয়র টাইগারদের সামনে পাত্তাই পায়নি লঙ্কানরা। আগে ব্যাট করে হারিয়ে ১২২ রানে অলআউট হয় তারা। জবাবে, ১১ বল হাতে রেখে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই জয় সৌম্য-শান্তরা। এরআগে, ২০১০ সালে নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসের এই ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছিল তারা। ২০১৬ সালে ভারতের গোহাটি-শিলংয়ে অনুষ্ঠিত গেমসের ১২তম আসরে ক্রিকেটকে বাইরে রাখা হয়েছিল।
সকালে টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাট করতে মাঠে আমন্ত্রন জানান বাংলাদেশী অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শুরুটা বেশ ভালোই শুরু করেছিল লঙ্কানরা। দুই ওপেনার নিশাঙ্কা ও ফার্নান্দো পাওয়ার শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেছিলেন। তবে স্কোর বোর্ডে ৩৬ রান জমা হওয়ার সাথে সাথে এ জুঁটি রান আউটের ফাঁদে পড়ে। ১৬ রান করা ফার্নান্দো সাজঘরে ফিরলে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে বাংলাদেশ শিবিরে। এরপর আরো দ্রুত দু’টি উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে স্বল্প রানে বেঁধে ফেলার ঈঙ্গিত দেন হাসান মাহমুদ। এ বোলার ওয়ান ডাউনে নামা লাসিথ ক্রসপোল্লে ও কামিন্দো মেন্ডিসকে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান। চতুর্থ উইকেট জুটিতে কামিন্দো মেন্ডিসকে সাথে নিয়ে দলকে সামনে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন ওপেনার নিশাঙ্কা। কিন্তু খুব বেশী দূর এগুতে পারেননি তিনি। দলীয় ৬২ রানেই ফিরতে হয় তাকে। রান আউট হয়ে উইকেট ছাড়ার আগে নিজের নামের পাশে জমা করেন ২২ রান। এরপর দলের স্কোর বোর্ডে মাত্র ২৫ রান জমা করতেই আরো তিন উইকেট হারিয়ে অনেকটা চাপে পড়ে যায় লঙ্কানরা। শেষদিকে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সাম্মু আসহানের ২৫ রানে ভর করে ১২২ রানের পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের হয়ে হাসান মাহমুদ ৩টি ও তানভীর ইসলাম নেন দুই উইকেট।
আগের দিন গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে এই দলটির কাছেই ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে পরাস্ত হয়েছিল লাল-সবুজরা। ফাইনালের আগে এমন পরাজয়ে স্বর্ণ পদক হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কায় ছিলেন। কিন্তু সেই শঙ্কা দূর করে স্বর্ণ অক্ষুন্ন রাখে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। জয়ের জন্য ১২৩ রানের লক্ষ্যে মাঠে নেমে শুরুতেই দলকে জয়ের ভীত গড়ে দেন সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার। এ জুঁটি ৪৪ রান জমা করেন ওপেনিং পার্টনারশীপে। ২৮ বলে ২৭ রান করে সৌম্য বিদায় নিলেও কোন চাপে পড়েনি জুনিয়র টাইগাররা। দ্বিতীয় উইকেট জুঁটিতে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দলের হাল ধরেন সাইফের সাথে। দু’জনই আক্রমনাতœক ব্যাটিং শুরু করেন। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে রান আউটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরের পথ ধরেন সাইফ। ৩০ বলে তিন বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারি দিয়ে নিজের ইনিংস সাজিয়েছিলেন এ ওপেনার। ্এরপর মাঠে নামা ইয়াসির আলীও কম যাননি। তিনিও ব্যাট হাঁকিয়েছেন সমানতালে। জয় থেকে দল যখন ১৫ রান দূরে, তখন ইয়াসির কলম্বোগের শিকারে পরিনত হন। ১৬ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলেন এ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত সোনার পদক নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক শান্ত। ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। বল হাতে তিন উইকেট নেয়া হাসান মাহমুদ ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন।